অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম | Passport Application

দালাল ছাড়াই যদি কম খরচে নিজে নিজে অনলাইনে পাসপোর্ট করতে চান, তাহলে জেনে নিন ই পাসপোর্ট করার নিয়ম, খরচ, কাগজপত্র ও বায়োমেট্রিক সম্পর্কে।

২০২০ সালের ২২ জানুয়ারী থেকে বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু রয়েছে। বিশ্বে ১১৯ তম দেশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বপ্রথম বাংলাদেশ পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু হয়েছে। বর্তমানে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট গুলোও রিনিউ করতে চাইলে ই পাসপোর্ট করতে হয়। 

ই পাসপোর্ট এর আবেদন করার জন্য সঠিকভাবে সকল তথ্য পূরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার একটি মোবাইল বা কম্পিউটার থাকলে নিজেই অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন। ই পাসপোর্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য নিয়েই আজকের আলোচনা।

একনজরে আলোচনার সূচীপত্র

ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৪ 

অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার জন্য, epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে ভিজিট করে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও থানা সিলেক্ট করুন। তারপর ইমেইল দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে ‘Apply for a new passport’ অপশনে যান। আবেদন ফরমে ব্যক্তিগত ও পিতা মাতার তথ্য দিয়ে এবং পাসপোর্টের মেয়াদ, পৃষ্ঠা ও ডেলিভারি সম্পর্কিত সকল তথ্য পূরণ করে ই পাসপোর্ট আবেদন সাবমিট করুন।

তারপর এ-চালানের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে বায়োমেট্রিক দিন। কিছুদিন পর আপনার এলাকায় পুলিশ ভেরিফিকেশন এর জন্য যাওয়া হবে। এরপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট অফিস থেকে আপনার ই পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম | E Passport Renew

ই পাসপোর্ট করতে যা যা লাগে

  • জাতীয় পরিচয় পত্র/ অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • আবেদনের সামারি (Application Summary) পেজ এর প্রিন্ট কপি।
  • ই পাসপোর্ট আবেদনের কপি।
  • পাসপোর্টের আবেদন কারীর পিতা বা মাতার NID Card। শিশুদের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি আবশ্যক। বড়দের ক্ষেত্রে আবেদনের সময় নমিনি/ জরুরী যোগাযোগের তথ্য দিতে প্রয়োজন হয়।
  • অনলাইনে বা ব্যাংকের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান কপি।
  • পূর্বে কোন পাসপোর্ট থাকলে তার ফটোকপি।
  • পেশাজীবির ক্ষেত্রে- পেশাগত সনদের ফটোকপি বা চাকুরীর আইডি কার্ড।
  • আবেদনের পর পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করতে ইউটিলিটি বিলের কপি (গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ)।
  • চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট।

আরও পড়ুন: পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪।

অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম | Passport Application

অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম হলো-

  • epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
  • আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও থানা সিলেক্ট করুন।
  • একটি ইমেইল এড্রেস ও অন্যান্য তথ্য দিয়ে রেজিস্টার করুন।
  • Apply for a new passport অপশনে গিয়ে, আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ও পিতা মাতার তথ্য দিন।
  • তারপর পাসপোর্টের মেয়াদ, পৃষ্ঠা ও ডেলিভারি সম্পর্কিত তথ্য পূরণ করুন।
  • আবেদন পত্র রিভিউ করে সাবমিট করুন।

ই পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ করার বিস্তারিত প্রক্রিয়াটি নিচে ছবিসহ ধাপে ধাপে দেখানো হলোঃ

ধাপ ১: বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট পোর্টালে প্রবেশ

ই পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য Department of Immigration and Passport – এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। সরাসরি মূল ইন্টারফেসে প্রবেশ করতে ভিজিট করুন-  https://www.epassport.gov.bd/ এই লিংকে। এখানে Apply Online অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।

e-passport-application-online

ধাপ ২: আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও থানা নির্বাচন

অনলাইনে আবেদন শুরুর পূর্বে জেনে নিন, আপনার এলাকায় ই পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু হয়েছে কিনা।

প্রথমে, ‘Are you applying from Bangladesh’ অপশনে ‘Yes’ সিলেক্ট করতে হবে। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে থাকে। 

বিদেশ থেকে আবেদন করলে ‘No’ সিলেক্ট করুন। তারপর ড্রপডাউন মেন্যু থেকে আপনার বর্তমান ঠিকানা জেলা ও নিকটস্থ পুলিশ স্টেশন নির্বাচন করুন। তারপর Continue তে ক্লিক করুন।

e-passport-application-select-passport-office

যদিও বর্তমানে সম্পূর্ণ বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে। তবুও আপনার এলাকা ভিত্তিক আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস কার্যক্রম চলমান রয়েছে কিনা যাচাই করে নিতে হবে।

ধাপ ৩: ইমেইল ভেরিফিকেশন | পাসপোর্ট করার নিয়ম

অনলাইনে E-Passport ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আপনার একটি ইমেইল এড্রেস দিন। তারপর ‘I am human’ লেখার পাশের চেকবক্সে ক্লিক করুন। তারপর ক্যাপচা পূরণ করে Continue বাটনে ক্লিক করুন।

e-passport-application-enter-email-address

ধাপ ৪: ই পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন

এই পেইজে আপনার দেওয়া ইমেইল এড্রেস স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেখাবে। পরবর্তী ঘরে, পাসওয়ার্ড দিয়ে পূনরায় রিটাইপ করে কনফার্ম করুন।

আবেদনকারীর Given name ও Surname লিখুন। বাংলাদেশের কান্ট্রি কোড +880 সিলেক্ট করে আপনার একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিন। 

পূর্বে ই পাসপোর্ট ওয়েবসাইটের অ্যাকাউন্টে সাবমিট হয়নি এমন মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। এবার, ক্যাপচা পূরণ করে Create Account অপশনে ক্লিক করে একাউন্ট খুলুন।

e-passport-application-create-account-online

আপনার দেওয়া ইমেইল এড্রেস একটি ভেরিফিকেশন লিংক পাবেন। সেই লিংকে ক্লিক করে একাউন্ট ভেরিফাই করুন।

ধাপ ৫: সিলেক্ট পাসপোর্ট টাইপ

একাউন্ট ভেরিফাই সম্পন্ন হলে ইমেইল এড্রেস ও পাসওয়ার্ড দিয়ে E-Passport ওয়েবসাইটে সাইন ইন করুন। এবার Apply Online অপশন থেকে ‘Apply for a new passport’ লেখাতে ক্লিক করুন। 

e-passport-application-for-a-new-passport

এবার আপনার আবেদনের জন্য পাসপোর্ট টাইপ সিলেক্ট করুন। এখান থেকে Ordinary Passport ও Official Passport করতে পারবেন। অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ পাসপোর্ট করতে Ordinary Passport সিলেক্ট করুন।

এবার Save and Continue লেখাতে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান। 

e-passport-application-select-passport-type

ধাপ ৬: পার্সোনাল ইনফরমেশন

এই ধাপে, পাসপোর্ট করার নিয়ম অনুসারে আবেদনকারীর ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে। উপরের ‘I apply for myself’ এর চেকবক্সে ক্লিক করতে পারেন। এতে করে ই-পাসপোর্ট সাইটে অ্যাকাউন্টধারীর নাম, মোবাইল নাম্বার স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে। অন্য কারো জন্য আবেদন করলে ধারাবাহিকভাবে- 

  • আবেদনকারীর লিঙ্গ।
  • সম্পূর্ণ নাম (Given Name + Surname)।
  • পেশা।
  • ধর্ম।
  • মোবাইল নাম্বার লিখুন।

এবার Birth Data অপশনে-

  • আবেদনকারী কোন দেশে জন্মগ্রহণ করেছে।
  • জন্মস্থানের জেলা।
  • জন্ম তারিখ সিলেক্ট করুন।

Citizenship Information – অপশনে, আপনি জন্মসূত্রে বাংলাদেশী হলে ‘By Birth’ সিলেক্ট করুন। এবার Save and Continue ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।

e-passport-application-personal-information-fillup

ধাপ ৭: বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানার তথ্য 

অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়মের এই ধাপে, প্রথমে আবেদনকারীর স্থায়ী ঠিকানার তথ্য লিখুন। NID Card/ Birth Certificate অনুযায়ী তথ্য দিন। এখানে আবেদনকারীর জেলা, গ্রাম, সড়ক, পোস্ট অফিস ও পোস্ট কোড লিখুন।

সর্বশেষ আপনার নিকটস্থ পুলিশ স্টেশন নির্বাচন করুন। স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা একই হলে চেকবক্সে ক্লিক করুন। স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা ভিন্ন হলে একইভাবে বর্তমান ঠিকানার তথ্য দিন। এবার Save and Continue ক্লিক করুন।

e-passport-application-address-information

ধাপ ৮: ID Documents | পাসপোর্ট করার নিয়ম

আপনার পূর্ববর্তী কোন MRP/ ePP পাসপোর্ট আছে কিনা তা সিলেক্ট করুন। পূর্বে কোন পাসপোর্ট না থাকলে ৩য় অপশনটি সিলেক্ট করুন। অন্য কোন দেশে আপনার পাসপোর্ট থাকলে তাও সিলেক্ট করুন।

আপনার পূর্ববর্তী কোন পাসপোর্ট এর তথ্য গোপন করলে, নতুন আবেদনটি বাতিল করা হবে। এবং আপনার পাসপোর্ট আবেদনের ফি পুনরায় ফেরত দেওয়া হবে না।

নিচে কমপক্ষে একটি Identification Information দিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর/ অনলাইন জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিতে পারেন। অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদনের পরবর্তী পেজে যেতে save and continue তে ক্লিক করুন।

e-passport-application-id-documents-info

ধাপ ৯: প্যারেন্টাল ইনফরমেশন

এই ধাপে, আবেদনকারীর পিতা-মাতার তথ্য পূরণ করুন। এবং এক্ষেত্রে-

  • আবেদনকারীর পিতার সম্পূর্ণ নাম।
  • পিতার পেশা।
  • জাতীয়তা (যে দেশের নাগরিক তা সিলেক্ট করুন)।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর লিখুন।

একইভাবে, মাতার সম্পূর্ণ নাম, পেশা, জাতীয়তা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর লিখুন। পিতা-মাতা উভয়ের ক্ষেত্রে আবেদন ফরমে পূরণের উপযুক্ত তথ্য না জানা থাকলে অথবা পিতা-মাতা মৃত্যুবরণ করলে Father Information/ Mother Information লেখার পাশে Unknown বক্সে ক্লিক করুন। 

সর্বশেষ, পাসপোর্ট করার নিয়মানুসারে অভিভাবকের তথ্য দিন। এক্ষেত্রে আপনার পিতা বা মাতাকে অভিভাবক হিসেবে চিহ্নিত করতে পারবেন। তারপর Save and Continue বাটনে ক্লিক করুন।

e-passport-application-parental-information

ধাপ ১০: স্পাউস ইনফরমেশন | পাসপোর্ট করার নিয়ম

অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদনের এই ধাপে আবেদনকারীর বৈবাহিক অবস্থা সিলেক্ট করতে হবে। এখানে Marital Status বাছাই করার জন্য ড্রপ-ডাউন মেন্যুতে ক্লিক করুন।

তারপর বৈবাহিক আবস্থার ঘরে Single, Married, Divorced, Windower, Widow এই অপশন গুলো পাবেন। এখান থেকে আপনার বৈবাহিক অবস্থা অনুসারে সঠিক অপশনটি বাছাই করে নিন।

e-passport-application-marital-information

ধাপ ১১: Emergency contact বা জরুরী যোগাযোগের তথ্য 

পাসপোর্ট সম্পর্কিত জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য আপনার নিকটস্থ একজনের তথ্য দিতে হবে। এক্ষেত্রে পরিবারের সদস্য, যেমন- বাবা, মা, ভাই এর ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার দিতে পারেন। জরুরী যোগাযোগের ক্ষেত্রে যার তথ্য দিবেন তার ঠিকানা জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে দিতে হবে। 

সাধারণত পাসপোর্ট আবেদন এপ্রুভের ক্ষেত্রে বা ডেলিভারির ক্ষেত্রে কোন জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। তাই ই পাসপোর্ট অফিস থেকে ইমারজেন্সি কন্টাক্ট নাম্বারে যোগাযোগ করা হয়। যাতে করে, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের সময় আপনার সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হলেও এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারে।

ধাপ ১২: Passport Option | পাসপোর্ট করার নিয়ম

এখানে, পাসপোর্ট অপশনে আপনার পাসপোর্টের পৃষ্ঠা ও মেয়াদ বাছাই করুন। অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদনের নিয়মে ৪৮ ও ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট করা যায়। আপনি খুব বেশি ভ্রমণ করলে বিদেশে খুব বেশি যাতায়াত হলে ৬৪ পৃষ্ঠা সিলেক্ট করতে পারেন। অন্যথায়, ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্টই যথেষ্ট। এবার Save and Continue ক্লিক করুন।

৫-১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করা যায়। তাই আপনার প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিনের হলে ১০ বছর সিলেক্ট করতে পারেন। এবার পাসপোর্ট এর মেয়াদ ও পৃষ্ঠা সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ফি দিতে হবে।

Passport Price অপশনে আপনার পাসপোর্ট ফি এর পরিমাণ দেখতে পাবেন। এখানে পুনরায় Save and Continue ক্লিক করুন।

ধাপ ১৩: Passport Delivery Option

পাসপোর্ট ডেলিভারির ধরন অনুযায়ী এখানে দুইটি অপশন পাবেন। যথা:- Regular Delivery ও Express Delivery। এছাড়াও পাসপোর্ট অফিস থেকে Super Express Delivery আবেদন করতে পারবেন। পাসপোর্ট ডেলিভারির ধরন অনুযায়ী ফি কম বেশি হয়ে থাকে।

e-passport-application-select-passport-delivery-option

Regular Delivery: এর ক্ষেত্রে ২১ কার্যদিবস সময় নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ২১ দিনের পুর্বেই আপনার পাসপোর্ট তৈরি হয়ে যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ২৫-২৮ কার্যদিবসও সময় লাগতে পারে।

Express Delivery: এক্ষেত্রে ৭-১০ কার্যদিবস সময় নেওয়া হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১০ দিনের বেশি সময় লাগে। যাদের অল্প সময়ের মধ্যে বিদেশ যেতে পাসপোর্ট প্রয়োজন, তারা এই অপশনটি সিলেক্ট করতে পারেন।

Super Express Delivery: অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়মে এই অপশনটি পাবেন না। এর জন্য সরাসরি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে আবেদন করতে হবে।

এই মাধ্যমে ৭ দিনের কম সময়ে, ক্ষেত্রবিশেষে ৩-৪ দিনেই পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন। এই আবেদনের সাথে Pre-Police verification এর প্রয়োজন হয়। 

ধাপ ১৪: আবেদন সাবমিট ও পেমেন্টের জন্য অগ্রসর

এই পেজে, আপনার আবেদনের সকল তথ্য একসাথে দেখতে পাবেন। আবেদনের ক্ষেত্রে কোন তথ্য ভুল থাকলে Edit অপশনে ক্লিক করে, তা সঠিক করে নিন। সকল তথ্য পূরণের পর আবেদন পত্রটি Submit করে পরবর্তী পেমেন্ট অপশনে যান। 

আপনি চাইলে অফলাইনে বা অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন ফি জমা দিতে পারবেন। Otherwise, এখান থেকে আবেদনটি সাবমিটের পর Print Summary অপশন পাবেন। সেখান থেকে আবেদন পত্রের সংক্ষিপ্ত পৃষ্ঠাটি ডাউনলোড করে নিন। 

একইসাথে ব্যাংকের A Chalan এর মাধ্যমে ফি পরিশোধ করার জন্য একটি পেমেন্ট ফরম পাবেন। সেটি প্রিন্ট করে নিন। পরবর্তীতে এগুলো পাসপোর্ট অফিসে বায়োমেট্রিকের প্রদানের সময় জমা দিতে হবে।

e-passport-application-summary

ধাপ ১৫: ই পাসপোর্ট আবেদন ফরম ডাউনলোড

পাসপোর্ট করার নিয়মে আবেদন সাবমিটের পর পাসপোর্ট আবেদনের কপি ডাউনলোড করার অপশন পাবেন। সেই পেজে থাকা অবস্থায় কিবোর্ড থেকে Ctrl + P একসাথে চাপুন। তারপর প্রিন্ট ডায়ালগ বক্স ওপেন হবে। সেখান থেকে সঠিক সাইজে ই পাসপোর্ট এর আবেদন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।

Passport-Application-form-print

ই-পাসপোর্ট ফি প্রদান | E passport Fee

বর্তমানে ই পাসপোর্ট ফি ২ ভাবে পরিশোধ করা যায়। যথা: 

  • Online Payment.
  • Offline Payment.

আরও পড়ুনঃ পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে | E Passport Fee

অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়মে যেকোন মোবাইল ব্যাংকিং, ই-ওয়ালেট, ইন্টারনেট ব্যাংকিং অথবা কার্ডের মাধ্যমে ফি পেমেন্ট করতে পারবেন। এক্ষেত্রে পেমেন্ট অপশন অনুযায়ী কিছুটা চার্জ প্রযোজ্য হতে পারে। অনলাইন পেমেন্ট পরিশোধের পেমেন্ট স্লিপটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিন।

অফলাইনে পেমেন্ট করার জন্য অনুমোদিত ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে অ্যাপ্লিকেশন সামারির সাথে পাওয়া পেমেন্ট স্লিপটি দিন। তারপর এ-চালান এর মাধ্যমে আপনার পাসপোর্টে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করুন।

এক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে আপনাকে একটি চালানের কপি প্রদান করা হবে। এই চালানের কপি, আবেদনের কপি ও এপ্লিকেশন সামারির প্রিন্ট কপি একত্রিত করে সংরক্ষণ করুন।

আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে ডকুমেন্টস ও বায়োমেট্রিক প্রদান 

অনলাইনে আবেদন করার পর আপনার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে বায়োমেট্রিক প্রদান করতে হবে। পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার পূর্বে- আবেদনের প্রিন্ট কপি, এপ্লিকেশন সামারি, চালানের কপি নিতে হবে। পাশাপাশি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, পেশা সনদ ইত্যাদি সাথে নিয়ে নিন। 

পাসপোর্ট অফিসে আপনার আবেদনের তথ্য যাচাই করার পর বায়োমেট্রিকের জন্য পাঠানো হবে। সেখানে আপনার-

  • পাসপোর্টের জন্য ছবি।
  • হাতের আঙ্গুলের ফিঙ্গারপ্রিন্ট।
  • চোখের রেটিনা স্ক্যান করে বায়োমেট্রিক তথ্য রাখা হবে।

বায়োমেট্রিক সম্পন্ন হলে আপনাকে একটি অ্যাপ্লিকেশন স্লিপ দেওয়া হবে।

পরবর্তীতে আপনার আবেদনের বায়োমেট্রিকের সকল তথ্য ই পাসপোর্টের প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে। সেখান থেকে সার্ভারে তথ্য আপলোডের মাধ্যমে ১০টি ধারাবাহিক ধাপ অতিক্রম করা হবে।

সকল ধাপ সম্পন্ন হলে আপনার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে অ্যাপ্লিকেশন স্লিপ ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ ই পাসপোর্ট সংশোধন করুন সহজেই | Passport Correction.

ই পাসপোর্ট হয়েছে কিনা জানবো কিভাবে

ই পাসপোর্ট আবেদন ও বায়োমেট্রিক প্রদানের পর পাসপোর্ট প্রস্তুত হতে ১০টি ধাপ অতিক্রম করতে হয়। আপনার পাসপোর্টের আবেদনটি বর্তমানে কোন অবস্থায় আছে এবং কোন সমস্যা হয়েছে কিনা তা জানতে পাসপোর্ট চেক করার প্রয়োজন। 

পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করার জন্য ভিজিট করুন- https://www.epassport.gov.bd/authorization/application-status এই লিংকে। 

এখানে, আপনার অ্যাপ্লিকেশন স্লিপ থেকে Application ID ও সঠিক জন্ম তারিখ লিখুন। তারপর ক্যাপচা পূরণ করে Check করুন। আপনার পাসপোর্টটি বর্তমানে কোন ধাপে আছে তা জানতে পারবেন।

ই পাসপোর্ট সংগ্রহ | পাসপোর্ট করার নিয়ম

অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করার পর পাসপোর্ট তৈরি হয়ে গেলে, মোবাইলে SMS এর মাধ্যমে জানানো হবে। অথবা, Online status check করেও আপনার পাসপোর্টটি ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত হয়েছে কিনা জানতে পারবেন। 

তারপর সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে, ডেলিভারি স্লিপ ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।

শেষকথা

অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম অনুযায়ী সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি উপরোক্ত আলোচনা অনুসরণ করে সম্পন্ন করতে পারবেন। তবে আপনার কাছে আবেদন প্রক্রিয়া জটিল মনে হলে নিকটস্থ আইটি সার্ভিস প্রদানকারী দোকান থেকে আবেদন করতে পারেন।

এক্ষেত্রে আবেদন সাবমিট এর পূর্বে সকল তথ্য ভালোভাবে দেখে নিবেন।

1 thought on “অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম | Passport Application”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *