নতুন ভোটার নিবন্ধন করতে কি কি লাগে ২০২৫

Notun voter nibondhon

আপনি নতুন ভোটার হওয়ার জন্য অনলাইনে বা নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে চাচ্ছেন? তাহলে জেনে নিন নতুন ভোটার নিবন্ধন করতে কি কি লাগে।

বাংলাদেশে ১৮ বছরের নিচে জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করা গেলেও ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য ভোটার আইডি কার্ড করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। ১৮ বছরের পর থেকে ভোট দেওয়ার অধিকার পেলেও, বর্তমানে ১৬ বছর হলেই নতুন ভোটার হওয়া যায়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলে এবং সঠিক নির্দেশনা অনুসরন করে আপনি নিজে নিজে বিনা খরচে নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাই নতুন ভোটার নিবন্ধন করতে কি কি লাগে, কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন এই লেখাতে।

নতুন ভোটার নিবন্ধনের জন্য আবেদনর যোগ্যতা

নতুন ভোটারের জন্য আবেদনকারী প্রার্থীকে কিছু শর্তাবলী অবশ্যই পূরণ করতে হয়। এগুলো হলো:

  • আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • সর্বনিম্ন ১৬ বছর বা তার বেশি বয়সী হতে হবে।
  • পূর্বে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন করেনি এমন ব্যক্তি হতে হবে।

এসকল শর্তাবলী পূরণ করতে পারলে একজন ব্যক্তি অনলাইনে বা সরাসরি নির্বাচন কমিশন অফিসে আবেদন করতে পারবে। তবে কোন ব্যক্তি যদি প্রতারণা করে একাধিক আইডি কার্ড বানাতে চায়, সে ক্ষেত্রে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

আরও পড়ুনঃ নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২৫

ভোটার আইডি কার্ড করতে কি কি লাগে

নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য অনলাইনে nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে আবেদন করলে, আবেদনের সাথে কিছু প্রমাণপত্র সংযোজন করতে হয়। তাছাড়া পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাচন কমিশনের অফিসে বায়োমেট্রিক তথ্যাবলী (ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট) দেওয়ার সময়ও কিছু ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয়। নতুন এনআইডি কার্ড করতে প্রয়োজনীয় সেই সকল ডকুমেন্টস গুলো হলো:

  • অনলাইন বা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • আবেদনকারীর বাবা, মা, স্বামী/ স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি।
  • আবেদনকারীর নাগরিকত্ব সনদ বা চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট।
  • PSC/ JSC/ S.S.C অথবা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট।
  • বোর্ড পরীক্ষা/শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট না থাকলে, পাসপোর্ট/ ড্রাইভিং লাইসেন্স।
  • হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ কিংবা ইউটিলিটি বিলের কপি (বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ইত্যাদি)।
  • রক্তের গ্রুপ টেস্টের রিপোর্ট।
  • একটি সচল মোবাইল নাম্বার।
  • আবেদনকারীর বয়স বেশি হলে, নতুন ভোটার হওয়ার অঙ্গীকারনামা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
  • পেশা যুক্ত করার জন্য কর্মরত প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ন কিংবা এমপ্লয়ার আইডি (Employer ID)।

এছাড়াও বয়স বেশি হলে নাগরিকত্ব ও অন্যান্য বিষয়ে যাচাইয়ের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে বাড়তি ডকুমেন্টস চাইতে পারে। তদুপরি, অনলাইনে আবেদন করলে আবেদন পত্রের প্রিন্ট কপি/ সরাসরি আবেদন করলে নির্বাচন কমিশন অফিসে পূরণকৃত আবেদন ফরম জমা দিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করুন নিজেই

ভোটার আইডি কার্ড করতে কত টাকা লাগে

এনআইডি কার্ড একটি সরকারি ডকুমেন্ট। বাংলাদেশের সরকার তার নিজ দেশের এবং দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে বিনা খরচে ন্যাশনাল আইডি কার্ড সরবরাহ করে থাকে। স্বাভাবিকভাবে ভোটার নিবন্ধন করতে কোন টাকা দিতে হয় না। তবে অনলাইনে আবেদন করার ক্ষেত্রে, নিজে আবেদন না করে কোন কম্পিউটার-ইন্টারনেট সার্ভিসের দোকান থেকে আবেদন করলে, তাদের সার্ভিস চার্জ বাবদ খরচ হয়।

পরবর্তীতে, আইডি কার্ড ডাউনলোড করার সময় প্রিন্ট করে ল্যামিনেশন করতে স্বল্প টাকা খরচ হয়ে থাকে। বর্তমানে উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসগুলোতে বাড়তি চার্জ নেওয়া হয়। এ সকল কর্মকান্ড থেকে সচেতন থাকুন। চেষ্টা করুন যেন সরকারিভাবে ভোটার হালনাগাদের সময় নতুন আইডি কার্ডের আবেদন করতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করুন| NID Correction.

সরকারিভাবে নতুন ভোটার নিবন্ধন করতে যা যা করতে হবে 

বাংলাদেশে নির্দিষ্ট সময় পর পর সরকারিভাবে ভোটার জরিপ হয়। এ সময় প্রতিটি এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে প্রাপ্তবয়স্কদের/ ভোটার হওয়ার উপযুক্তদের তালিকাভুক্ত করা হয়। সরকারিভাবে এই সময় আবেদন করা অত্যন্ত সহজ। ভোটার হালনাগাদের সময় আবেদন করতে যা যা করতে হবে, সেগুলো হলো:

  • প্রথমেই ভোটার হালনাগাদের জরিপে আপনার পরিচয় এন্ট্রি করতে হবে।
  • তারপর উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে নতুন ভোটার আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
  • আবেদন ফরমটিতে প্রয়োজন অনুসারে আপনার যাবতীয় তথ্য নির্ভূলভাবে পূরন করুন।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন- নাগরিকত্ব সনদ, জন্ম নিবন্ধন, পিতা-মাতার তথ্য সহ অন্যান্য কাগজাদী পিনআপ করে নির্বাচন অফিসে জমা দিন।
  • সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসার- সকল আবেদন টি যাচাই করে তা গ্রহনযোগ্য হলে নতুন ভোটার নিবন্ধনের অনুমোদন দিবে।
  • অনুমোদন পাওয়ার পর, নির্দিষ্ট তারিখে উপজেলা নির্বাচন অফিসে ডাকা হবে।
  • সেখানে আপনার আইডি কার্ডের ছবি তোলা তুলবে এবং আপনার ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিস স্ক্যান করা হবে।
  • তারপর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিসের কার্যালয়ে এই তথ্যাবলী প্রেরন করা হবে।

আরও পড়ুনঃ ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম ২০২৫

সবকিছু ঠিক থাকলে, নিবন্ধনকারীর তথ্য বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে আপলোড করা হবে। পরবর্তীতে, ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই অনলাইন থেকে নতুন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করা যায়।

আরও পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড ২০২৫ | NID Card Download.

শেষকথা

উপরোক্ত আর্টিকেলে, নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে কি কি লাগে, কত টাকা লাগে এসকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী জানতে পারলেন। এ সকল কাগজপত্র গুলো থাকলে এবং আবেদনের শর্তাবলী পূরণ করলে আপনিও NId Card -এর আবেদন করতে পারেন।

Similar Posts